শনিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৬

দুঃখটা যখন অনেক বড়





হঠাৎ করে দেখলাম আমার ব্লগের সব লেখা হারিয়ে গেছে। একদম সব!

আমি কিছুক্ষণ স্তদ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকলাম এবং কান্না চেপে গেলাম। এ কয়দিনের লেখাগুলো আর নেই ইন্টারনেটে! আমি ভাবছিলাম দুঃখটুকু সওয়া সম্ভব না। অনেক লেখারই ব্যাকআপ নেই কম্পিউটারে কিংবা অন্য কোন ওয়েবসাইটে।



গুগল করে জানলাম কিছু অংশ উদ্ধার করা সম্ভব গুগল সার্চের ক্যাশ থেকে। অনেক চেষ্টা করে যা পেলাম, তাতে মন আরো খারাপ হল। লেখাগুলো পুরনো, এবং একটা দুটো নতুন। কিন্তু কাল যে লেখাটা লিখেছি, হারিয়েছে। প্রচন্ড মন খারাপ নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম। শিশু একাডেমিতে বইমেলা হয়। ওখানে হিং টিং ছট এর স্টলে ভাইয়ারা থাকবে সবাই। হবু কম্পিউটার প্রকৌশলী কেউ কেন উপায় বাতলাতে পারেন কিনা। কেউ জানেননা কোন উপায়।

বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি আর শিশু একাডেমির গণিত অলিম্পিয়াড চলছিল। গেলাম, তনু আপু এবং অন্যরা আমার দুঃখ শুনে স্তদ্ধ। তনু আপুর দিকে যতবার চোখ পড়ছিল, উনি শান্তনা দিচ্ছিলেন, "তুই শান্ত হয়ে বোস। যেটুকু গেছে, মন খারাপ করে লাভ কী বল?"

সবার শান্তনা শুনে শুনে বসে রইলাম। পিচ্চিদের সাথে বিজ্ঞানের গেমগুলো নিয়ে মেতে উঠার চেষ্টা করলাম, কিন্তু তবু মন ভাল হল না। বাসায় ফিরে আবারো লাগলাম চেষ্টায়। এবং যতটুকু সম্ভব একটু একটু করে উদ্ধার হল। এবং কালকের লেখাটা উদ্ধার হবার পরে একটু বেশিই জোরে চিৎকার করে উঠলাম আনন্দে। একটা লেখাকে লিখতে হল প্রায় নতুন করে। গুগল থেকে কোড কপি করে করে লেখাগুলো ব্লগে সাজালাম। আমি HTML কে ভালবেসে ফেলেছি।

অনেকটা সাজানোর পরও মন খারাপটা গেল না। মন্তব্যগুলো তো নেই। তারপর ফেসবুক কিংবা গুগলে সবাই যে লিংকগুলো শেয়ার করেছে, সেগুলো তো আর কাজ করবেনা। নতুন করে দেয়া হয়েছে যে সব!

আমার ফেসবুকে একটা পোস্ট পড়ত হয়তবা বড়জোড় চল্লিশ পঞ্চাশ জন। অথচ ফেসবুকে সবাই গড়ে তিন-চারঘন্টা নিউজ ফীডে স্ক্রল করে। কিন্তু আমার ওয়েবসাইটে এসে কাল লেখা পড়েছে ১৩৭ জন! তার আগের কয়দিনও দৈনিক ৩০-৪০ জন করে পড়ে গেছে লেখাগুলো।

সাবস্ক্রাইব বাটন যোগ করছি, ইমেইলও ঠিকমত চেক করি। এবার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, ফেসবুক একাউন্টটা এখন নিষ্ক্রিয় আছে, এটাকে একদম মুছেই দেই! কোনকালে যদি আবারো খুব বেশি প্রয়োজন হয় ফেসবুকের, নতুন একটা খুলে নেব।

হ্যাঁ, ফেসবুক মুছে দিচ্ছি। একজন মানুষের চারশ জন বন্ধু থাকে না বাস্তবে। ফেসবুকে কেমন করে থাকে?


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন