শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিনগুলো

অনেক ছোটবেলা থেকে ইচ্ছে হত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব। কখনো মনে হত পড়ব বাংলায়, কখনোবা সাংবাদিকতায়। অঙ্কে পড়তে ইচ্ছে হয়েছে, ইচ্ছে ছিল বোটানি পড়বারও। ইচ্ছেগুলো কখনো ফানুসের জন্য জমে থাকেনি, আগ্রহগুলো ছুটেছে স্রোতের মত।

যখন নির্দিষ্ট করে ভাববার সময় হল, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ  নামে একটা বিষয় পড়ব বলে সিধে হলাম। সেই শখের চ্যারিটি করে বেড়ানো, ইউনিসেফের হয়ে গ্রাম গ্রাম ধরে বদলে দেবার স্বপ্ন, সেসব জেঁকে বসে খুব করে। কিন্তু সেখানে পড়া হবেনা, কঠোর সব পরামর্শ। আমি ঘাড় কাত করে সব শুনে যাই। তারপর ভাবতে হয়, কেমিকৌশলে পড়লে আমি সেদিকে ছুটতে পারব স্নাতকোত্তরে। তারপরে আসে পুষ্টি প্রতিষ্ঠানে পড়ার কথা। আমি আবারও আবিষ্কার করি, আমার সেই স্বপ্নগুলোর আরো কাছে এই বিষয়টা পৌঁছে দিতে পারে। কখনো লজ্জা হত, কারন এদেশে বিষয়টার নামে গার্হস্থ্য অর্থনীতিতে খুব করে পড়াশুনা হয়। ছেলে হয়ে সেখানে কে যায়?

সেই প্রতিষ্ঠানে প্রথম দিনটায় ঢুকেই আমার মন ভালো হয়ে যায়। আমি আমার মন ভালো হওয়ার হাঁটা শুরু করি এদিক ওদিক। আমার যখন মন ভালো থাকে, কিংবা খারাপ থাকে, আমি তিন-চার কিলোমিটার হাঁটি শহরের রাস্তা ধরে।

কয়েক বছর আগে আমি আঙ্গুল গুণে বের করেছিলাম, যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারি, তবে স্নাতক শেষ করে বের হব যখন, তখন একশ বছর বয়স হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের। আমার কাছে স্বপ্নের চেয়েও বেশি কিছু মনে হতে থাকে সেটাকে। আমি এখন সেই স্বপ্নের খুব কাছে।

পাঠ পরিকল্পনা হাতে পাবার পর শেষ লজ্জাটুকুও আমার দূর হয়, এখানে ঘরোয়া পুষ্টি প্রকল্প নিয়ে পড়তে আসিনি আমি। অণুজীববিজ্ঞান, রসায়ন, ব্যাবচ্ছেদ বিদ্যা, অর্থনীতি, মানব পুষ্টি, শরীরবিদ্যা, জীব-রসায়ন এর মত সব বিষয়ই পড়তে হবে এখানে। নেই ঘরোয়া পুষ্টির একটুখানি পড়াও। পাবলিক হেলথ এর পড়াও অনেক। পড়তে শুরু করলাম, এবং এবছরের জন্য পড়াশুনার কথা এখানেই শেষ।

প্রথম দুয়েকটা দিন অনেকটা চুপ করেই কাটে। তারপর শুরু হয় নানারকম আনন্দ। আমরা ধীরে ধীরে অনেককে তুই বলতে শিখি। ক্লাস করে হাঁটতে হাঁটতে টিএসসিতে গিয়ে বসি। অনেকক্ষণ করে গল্প করি, আর মাঝে মাঝে দুপুরে খেতে বসি ক্যাফেটেরিয়ায়। সেই অল্প একটু ভাত, একটুখানি আলু ভর্তা, আর মুরগির মাংস। মুরগির প্রতিটি টুকরো এত ছোট হতে পারে কখনো ভাবিনি। মাঝে মাঝে খেয়েছি এমন ছোট টুকরোর রান্না, তবে অন্ততর পাঁচ-সাত টুকরো। কখনোবা গলার এক টুকরো পরে পাতে। ঝোল থাকে স্বচ্ছ, বাটি ভরা। তাই দিয়ে আধপেট খেয়ে বলি, হল তো লাঞ্চ, এবার আড্ডায় বসি।

প্রথম দিককার আড্ডায় পাই ছেলেদের দল থেকে শ্রাবণ, মিলন, তানজির, জায়েদ আয়াতদেরকে। আর মেয়েদের মধ্যে অন্তরা, আমেনা, রিংকি, মীম। প্রথম দুয়েক সপ্তাহ এর আড্ডায় ঘুরেফিরে এই কজনের সাথে আরো দেখা যায় অনেককে। আস্তে আস্তে আড্ডার প্রবণতা আর বাড়ে। সবাই যোগ দিতে শুরু করে আড্ডায়। আমরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে কাটাতে শুরু করি আমাদের সময়গুলো।

এর মধ্যেই চলে আমার অনেক পছন্দের কাজ। বিজ্ঞান লেখা, এদিক ওদিক ছুটে বেড়ানো থাকে মূল আকর্ষণ। 

[অসমাপ্ত! আমি দুঃখিত, একটা লেখা ছেড়ে একবার উঠলে, মন খারাপে কিছু সময়ে ডুবলে সেটা আর কখনো লেখা হয়ে ওঠে না। এটা আর কখনো লেখা হবেনা। এরকম কিছু ডায়েরি ঘেটে পরে কখনো লিখব। ] 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন